মিলের অন্বয়ী-ব্যতিরেকী পদ্ধতি ব্যাখ্যা করো

উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন সাজেশন

মিলের অন্বয়ী-ব্যতিরেকী পদ্ধতি ব্যাখ্যা করো: [সংজ্ঞা, আকার, দৃষ্টান্ত, সুবিধা(২টি), অসুবিধা (২টি)]

       অথবা,

যমনই আমি সকালে বেড়াতে যাই তখনই আমার ঠান্ডা লাগে, আর যখন আমি সকালে বেড়াতে যাই না, তখণ আমার ঠান্ডা লাগে না। সুতরাং সকালে বেড়ানোই আমার ঠান্ডা লাগার কারণ - এখনে মিলের কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে? পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো? 
[চিহ্নিতকরণ, আকার, দৃষ্টান্ত, সুবিধা(২টি), অসুবিধা (২টি)]


উত্তরঃ কার্য কারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের জন্য দার্শনিক মিল যে পাঁচটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতির কথা বলেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অন্বয়ী-ব্যতেরিকী যা তিনি এখানে প্রয়োগ করেছেন।

সংজ্ঞা: অন্বয়ী পদ্ধতি ও ব্যতিরেকী পদ্ধতির মিশ্রিত রূপ হল এই অন্বয়ী-ব্যতিরেকী পদ্ধতি, যাকে সংযুক্ত পদ্ধতি বলা হয়। তিনি সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত এমন দুই বা ততোধিক সদর্থক দৃষ্টান্তে যদি কেবলমাত্র একটি বিষয় সাধারণ ভাবে উপস্থিত থাকে এবং আলোচ্য ঘটনাটি অনুপস্থিত এমন দুই বা ততোধিক নঞ্জর্থক দৃষ্টান্তে যদি সেই বিষয় অনুপস্থিত থাকে, তাহলে সে ঘটনার জন্য দুটি দৃষ্টান্তের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় সে বিষয়টি আলোচ্য ঘটনার কার্য যা কারণ বা কারণের অংশ।

সাংকেতিক আকার:

সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ -

 পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)     অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)   
ABC                                    abe 
ACD                                    acd 
ADE                                     adc 

নঞর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ -

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)     অনুবর্তী ঘটলা (কারণ)
BE                                       be
DE                                      de
FG                                      fg 

         ∴ A হল a এর কারণ।

 
বাস্তব উদাহরণ:

সদার্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ -

পূর্ববর্তী ঘটণা (কারণ)       অনুবর্তী ঘটণা (কার্য)
মশা কামড়েছে               ম্যালেরিয়া হয়েছে
মশা কামড়েছে               ম্যালেরিয়া হয়েছে
 মশা কামড়েছে               ম্যালেরিয়া হয়েছে 

নঞর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ -

পূর্ববর্তী ঘটনা (কারণ)        অনুবর্তী ঘটণা (কার্য)
মশা কামড়ায়নি                  ম্যালেরিয়া হয়নি
মশা কামড়ায়নি                  ম্যালেরিয়া হয়নি
মশা কামড়ায়নি                  ম্যালেরিয়া হয়নি

∴ মশার কামড় হল ম্যালেরিয়ার কারণ। 

সুবিধাঃ-

সুবিধা গুলি হল-
১) এই পদ্ধতির সাহায্যে আমরা কার্য থেকে কারণ এবং কারণ থেকে কার্যে অগ্রসর হতে পারি।

২) এই পদ্ধতির সাহায্যে যে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়, তা বহুকারণ সম্ভাবনা থেকে বেশিরভাগ মুক্ত।

অসুবিধাঃ-

অসুবিধা গুলি হল-
১) এই পদ্ধতি পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভরশীল বলে এক্ষেত্রে অপর্যবেক্ষণ দোষ দেখ দেবার সম্ভাবণা থাকে।

২) এই পদ্ধতির সিদ্ধান্ত অন্বয়ী পদ্ধতির সিদ্ধস্ত নিশ্চিত হলেও সুনিশ্চিত নয়।

সবশেষে বলা যায় অন্বয়ী-ব্যতিরেকী পদ্ধতিতে দুই ধরণের দৃষ্টান্ত থাকায় এই পদ্ধতির প্রয়োগ খুবই বিজ্ঞানসম্মত।




উচ্চ মাধ্যমিক দর্শন সাজেশন প্রশ্ন উত্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post